মাঙ্কিপক্স নিয়ে শাহজালাল বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি
মাঙ্কিপক্স নিয়ে শাহজালাল বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি
আফ্রিকা, ইউরোপর পর এবার এশিয়ায় মাংকিপক্স (এমপক্স) ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। পাকিস্তানে এ পর্যন্ত ৩ জনের দেহে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে এ ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সতর্ক অবস্থান রয়েছে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (১৭ আগস্ট) বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. কামরুল ইসলামের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, বিমানবন্দরের আগমনী চ্যানেলে সার্বক্ষণিক একটি চিকিৎসক দল নিয়োজিত রয়েছে। মাঙ্কিপক্স বিষয়ে এয়ারলাইনসগুলোকে সতর্ক থাকতে হবে। মাঙ্কিপক্স লক্ষণযুক্ত কোনো যাত্রী থাকলে দ্রুত তা স্বাস্থ্য বিভাগকে জানাতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশে আসার ২১ দিনের মধ্যে যাত্রীদের মাঙ্কিপক্স লক্ষণগুলো দেখা দিলে ১০৬৫৫ নম্বরে কল করতেও অনুরোধ করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, এমপক্স ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট একটি সংক্রামক রোগ। এতে বেদনাদায়ক ফুঁসকুড়ি, লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া এবং জ্বর হতে পারে।
বিমানবন্দর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এর মাঙ্কিপক্স নিয়ে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য সতর্কতার প্রেক্ষিতে ১৬ আগস্ট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, বেবিচক, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, এয়ারলাইনস, রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র এবং বিমানবন্দর স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
অপারেশনস মেম্বার এয়ার কমোডর এ এফ এম আতীকুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের জন্য সতর্কতা ও দায়িত্ব সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য বিভাগ ইতোমধ্যে লক্ষণযুক্ত যাত্রীদের মোকাবিলার জন্য ব্যবস্থা স্থাপন করেছে। লিফলেট দিচ্ছে এবং আগমন স্বাস্থ্য ডেস্কগুলো ২৪/৭ ডাক্তারের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে আগত যাত্রীদের তাপমাত্রা থার্মাল স্ক্যানার আর্চওয়ে দ্বারা স্ক্রিন করছে। প্রয়োজন হলে লক্ষণযুক্ত যাত্রীদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, সংক্রামক রোগ হাসপাতাল এবং কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে পাঠানো হবে।
বৈঠকে এয়ারলাইনসগুলোকে সতর্ক থাকতে এবং কোনো লক্ষণযুক্ত যাত্রী থাকলে দ্রুত স্বাস্থ্য বিভাগকে অবহিত করতে বলা হয়েছে।
আফ্রিকার কিছু অংশে ছড়িয়ে পড়া মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবকে ‘খুব উদ্বেগজনক’ উল্লেখ করে গত ১৫ আগস্ট বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
ডব্লিউএইচও প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইসাস বলেছেন, আফ্রিকা এবং তার বাইরে আরও ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা ‘খুব উদ্বেগজনক’। তিনি বলেন, এই প্রাদুর্ভাব বন্ধ করতে এবং জীবন বাঁচাতে একটি সমন্বিত আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া অপরিহার্য। মাঙ্কিপক্স সংক্রামক রোগ।
এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে এমনকি শ্বাসপ্রশ্বাস থেকেও অন্য কেউ এতে সংক্রমিত হতে পারে। মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ ফ্লুর মতো। এটি ত্বকের ক্ষত সৃষ্টি করে এবং মারাত্মক হতে পারে, ১০০টির মধ্যে চারটি মৃত্যু ঘটায়।
মধ্য আফ্রিকার কঙ্গো, বুরুন্ডি, রুয়ান্ডা, উগান্ডা, কেনিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশে এটি ছড়িয়ে পড়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শরীরে এর কোনো লক্ষ্মণ দেখা দিলে অথবা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে, অথবা সংক্রমিত দেশ ভ্রমণের ২১ দিনের মধ্যে এই লক্ষ্মণ দেখা দিলে ১৬২৬৩, ১০৬৫৫ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
এমপক্সের সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে—জ্বর (৩৮.৫ক্ক সেলসিয়াস), মাথাব্যথা, পেশি ব্যথা, পিঠে ব্যথা, দুর্বলতা, ফোলা লসিকা গ্রন্থি এবং ত্বকের ফুসকুড়ি বা ক্ষত। লসিকা গ্রন্থির ফোলাভাব এমপক্সের একটি বৈশিষ্ট্যযুক্ত লক্ষণ।